অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : শক্তিশালী ভূমিকম্পে সোমবার সিরিয়ার আলেপ্পো শহরের একটি ধসে পড়া ভবন থেকে এক নবজাতক শিশুকন্যাকে উদ্ধার করা হয়েছে। তবে সন্তান প্রসবের পর ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে মারা যান মা। বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ভূমিকম্পে মা-বাবা ও চার ভাইবোনকে হারিয়েছে সদ্যজাত শিশুটি। বর্তমানে শিশুটি সিরিয়ার আফরিন শহরের একটি হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে। শিশুটির দাদা সালাহ আল বদরান তার পরিবার হারানো শিশুটির দায়িত্ব নিয়েছেন।
নবজাতক শিশুটির নাম রাখা হয়েছে ‘আয়া’। যার অর্থ ‘স্রষ্টার চিহ্ন’। আয়ার চিকিৎসার দায়িত্বে থাকা চিকিৎসক হানি মারুফ জানান, শিশুটির মা আবু হাদিয়া সম্ভবত তার মৃত্যুর কিছুক্ষণ আগে জন্ম দিয়েছিলেন। মায়ের মৃত্যুর কয়েক ঘণ্টা পর শিশুটিকে উদ্ধার করা হয়।’
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বর্তমানে আয়ার শারীরিক অবস্থা আশঙ্কা মুক্ত। আয়ার বাবা-মা উত্তর-পশ্চিম সিরিয়ার জেন্ডারিস শহরে থাকতেন। শিশুটির পরিবার শহরের একটি পাঁচতলা ভবনে থাকত। ভূমিকম্পের ধ্বংসস্তূপে চাপা পাঁচতলা ভবনের কংক্রিটের নিচে জন্ম নেয় ‘আয়া’।
ভূমিকম্পের প্রায় ১০ ঘণ্টা পরে উদ্ধারকারীরা মৃত মায়ের নাভির সঙ্গে সংযুক্ত কংক্রিটের স্তূপের নীচে থেকে শিশুটিকে জীবিত উদ্ধার করে। শিশু আয়াকে উদ্ধারের ভিডিও ইতোমধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যাপক আলোড়ন ফেলেছে। অনেকেই আয়ার দায়িত্ব নেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন।
কাতারি একজন টিভি অ্যাঙ্কর লিখেছেন, ‘আইনি প্রক্রিয়া আমাকে সম্মতি দিলে আমি শিশুটির দায়িত্ব নিতে চাই।’ অন্য এক নেটিজেন লিখেছেন, ‘শিশুটির দায়িত্ব নিয়ে সুন্দর ভবিষ্যৎ দিতে চাই।’ হাসপাতালের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা খালিদ আত্তিয়াহ জানান, শিশু আয়ার দায়িত্ব নিতে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে অসংখ্য ফোন আসছে।
যাইহোক, আয়াকে হাসপাতাল থেকে ছাড়ার পরে, তাকে জেন্ডারিস শহরে বসবাসকারী তার দাদা সালাহ আল বদরানের কাছে হস্তান্তর করা হবে বলে জানা গেছে। সোমবার (৬ ফেব্রুয়ারি) সিরিয়া সীমান্তের কাছে তুরস্কের গাজিয়ানটেপে ৭ দশমিক ৮ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে।
পরে একই দিনে ৭ দশমিক ৫ মাত্রার আরেকটি ভূমিকম্প আঘাত হানে। দুইটি শক্তিশালী ভূমিকম্পে উভয় দেশেই হাজার হাজার ভবন ধসে পড়েছে। উদ্ধার কর্মীরা ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে পড়া মানুষকে বাঁচাতে প্রাণপণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা অনুমান করেছে, তুরস্ক ও সিরিয়া জুড়ে আড়াই কোটিরও বেশি মানুষ ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।
Leave a Reply